শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
চার মাস দায়িত্ব পালনকালে সেনাবাহিনীর ১২৩ সদস্য হতাহত নওগাঁর নিতপুরে কীটনাশক প্রয়োগে তিন লক্ষাধীক টাকার মাছ নিধন করেছে দুর্বৃত্তরা ঈশ্বরদী টিভি রিপোর্টার্স ক্লাবের আত্মপ্রকাশ, সভাপতি চ‍্যানেল এস এর বায়েজিদ, সম্পাদক বিজয় টিভির সবুজ কসবায় বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশী আহত কটিয়াদীতে হেলমেট ও লাইসেন্সবিহীন মোটরসাইকেল চালকদের জরিমানা বিয়ের ৪ মাসের মাথায় যৌতুকের দাবিতে নববধূকে পিটিয়ে আহত মুরগির বাচ্চায় দিনে ৯ কোটি টাকা লোপাট নরসিংদীতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উঠান বৈঠক কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হরিপুরে গ্রামবাংলার ঝোপঝাড় হতে বিলুপ্তির পথে কুচফল ওয়াজের মাঠ কাপানো আর নারীদের খাট কাপানো হুজুর মুফতি মুহাম্মদ শফিকুজ্জামান
`মাকে ফোন দাও, বলো চিপস নিয়ে আসতে’

`মাকে ফোন দাও, বলো চিপস নিয়ে আসতে’

ভিশন বাংলা ডেস্ক: তাসমিন মাহিরা তুবা। বয়স চার বছর। ছলছলে চোখে তাকিয়ে রয়। মা নিচে গেছে ড্রেস আনতে। আসার সময় চিপস, চকলেট নিয়ে আসবে। না এলে মুখে কিছু নেবে না, এমন বায়না তুবার।

ছোট্ট এই তুবাকে ভর্তির জন্য বাড্ডার একটি স্কুলে খোঁজ নিতে গিয়েই ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তাসলিমা বেগম রেনু (৪০)। রোববার লক্ষ্মীপুরের রায়পুরার সোনাপুর গ্রামে তার দাফন হয়েছে।

মায়ের দাফনের পর খালাদের সঙ্গে ঢাকায় ফিরেছে তুবা। এখনও মায়ের ছবি সর্বক্ষণ ভাসছে তুবার সামনে।

 মায়ের মৃত্যুর বিষয়টি সে বুঝতে পারেনি। সে জানে, তার মা বাসার নিচে গেছে। চলে আসবে। কিন্তু কেন আসছে না- নিকটাত্মীয়দের কাছে এমন প্রশ্নও বারবার ছুড়ে দিচ্ছে ফুটফুটে তুবা। স্বজনদের কাছে বায়না ধরছে, ‘মাকে ফোন দাও, বলো চিপস নিয়ে আসতে। না এলে আমি খাব না।’

মায়ের কথা মনে পড়লে কান্না আর থামছেই না তুবার। মায়ের কথা ভুলিয়ে রাখতে স্বজনের পাশাপাশি স্কুলপড়ুয়া ভাই ১১ বছরের তাহসিন আল মাহিরকেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। খেলার ছলে ছোট্ট বোনটিকে মায়ের কথা ভুলিয়ে রাখতে চাইছে সে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীর বাসায় গিয়ে এমন দৃশ্যই দেখা গেল।

আট দিন ধরে মা আসছে না। তাই তুবার মেজাজও ভালো যাচ্ছে না। সবকিছু নিয়ে বায়না করছে, বায়না মেটানো না হলেই চিৎকার, কান্নাকাটি করছে। বাসায় যে আসে সেই তুবার ছবি তুলতে চায়, এটিও তার পছন্দ নয়। তাই ঘরে অপরিচিত কেউ ঢুকে মুঠোফোন হাতে ছবি তুলতে চাইলেই তুবা বলে, ‘আমি ছবি তুলব না।’

তুবার খালা নাজমুন নাহার জানান, তুবা এখনও বোঝে না- তার মা মারা গেছে। ঘটনার দিন সকালে তুবাকে রেনু বলে গিয়েছিল, সে নিচে যাচ্ছে; চলে আসবে। তাই তুবা এখনও সেটিই জানে- তার মা নিচে গেছে, চলে আসবে। মাঝেমধ্যেই প্রশ্ন করছে, তার মা কেন তাড়াতাড়ি আসছে না? মোবাইল ফোন নিয়ে মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছে সে।

দিনে খেলার ছলে তুবাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে রাখলেও রাতে আর রক্ষা নেই। ঘুমের সময় হলে কান্নাকাটি শুরু। মায়ের বুকে শুয়ে ঘুমাত তুবা। এ কারণে ঘুম পেলে মায়ের জন্য খুবই অস্থির হয়ে যায়। বোঝানো মুশকিল হয়ে পড়ে তখন তাকে।

ছলছল চোখে তাকিয়ে রয় তাহসিন আল মাহিরও। বোনের বায়না তাকে আরও কষ্ট দেয়। যতক্ষণ পারছে খেলার ছলে ভুলিয়ে-ভালিয়ে রাখছে। না পারলে চোখের পানি মুছতে শুরু করে। ‘তুবা আমার একমাত্র বোন। আমি জানি, আমার মাকে ওরা বিনাদোষে মেরে ফেলেছে। তুবা জানে না। আর কোনো দিন মাকে কাছে পাব না। খুব কষ্ট হচ্ছে। সারাজীবন এই কষ্ট থাকবে।’

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com